কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে
মুসলমানদের পবিত্র ও উল্লেখযোগ্য প্রধান উৎসবের মধ্যে একটি হল ঈদুল আজাহা বা কোরবানের ঈদ। কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে বা ঈদুল আযহা ২০২৪ কবে তা নিয়ে রয়েছে আগ্রহ

মুসলমানদের পবিত্র ও উল্লেখযোগ্য প্রধান উৎসবের মধ্যে একটি হল ঈদুল আজাহা বা কোরবানের ঈদ। কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে বা ঈদুল আযহা ২০২৪ কবে তা নিয়ে রয়েছে আগ্রহ। মূলতঃ হিজরি সনের দ্বাদশ মাস বা জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে বা আরাফা ও পবিত্র হজ পালনের পরবর্তী দিন সূর্য উদয় হতে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যাদের উপর কোরবানি ওয়াজিব তারা হালাল ও অনুমোদিত পশু দিয়ে কোরবানি আদায় করে থাকে। কোরবানি জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তম দিনে পালন করা হয়ে থাকে।
কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে
২০২৪ সালের কোরবানির ঈদ বা ঈদুল আযহা কবে কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে তা নিয়ে উৎসুক মুসলমানদের মধ্যে রয়েছে অনেক আগ্রহ। কারন হিসেবে, মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবগুলো মূলত চাঁদের হিসেব বা চন্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল। হিজরি সনের বছর সাধারণত ৩৫৫ দিনে হয়ে থাকে বিধায় অন্যান্য বর্ষপঞ্জি বা ক্যালেন্ডারের সাথে প্রতি বছর তারিখের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। তাই ইংরেজি বর্ষপঞ্জি বা ঈসায়ি সনের সাথে মুসলমানদের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রতি বছর ১০ দিন করে এগিয়ে যায়। এছাড়া, সকল মুসলিম দেশগুলতে একই ক্যালেন্ডার না ব্যবহারও তারিখের তারতম্যের আরেকটি কারণ।
আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্য তথা সৌদি আরব কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরতের সাথে ইসলামের আচার-অনুষ্ঠানগুলো পালন করলেও এশিয়া মহাদেশের অঞ্চলের দেশ বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একদিন পরে পালন করে থাকে। এই পালন নিয়ে মতপার্থক্য দীর্ঘদিনের। একদল ধ্যপ্রাচ্য তথা সৌদি আরব কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরতের সাথে পালনের পক্ষে এবং অন্য দল ধ্যপ্রাচ্য তথা সৌদি আরব কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরতের একদিন পরে পালনের পক্ষে।
কোরবানির ঈদ কত তারিখে বাংলাদেশে
কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে বা ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ মূলত ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের দুই মাস ১০ দিন পরে হয়ে থাকে। সেই হিসেবে, ১৬ জুন অথবা ১৭ জুন ২০২৪ তারিখ বাংলাদেশে কোরবানের ঈদ বা ঈদুল আযহা পালিত হবে। মুলতঃ চন্দ্র মাস জিলহজ মাসের ১০ম তারিখে কোরবানির ঈদ ২০২৪ পালিত হয়।
তবে, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৌদি আরব তথা মধ্য প্রাচ্যে আগামী ১৬ জুন ২২৪ তারিখে পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ পালিত হবে। মধ্য প্রাচ্যের এই দেশের তালিকায় আরও রয়েছে কাতার, অমান, বাহরাইন, ইরাকসহ সকল দেশ।
ঈদ পলান সংক্রান্ত হাদিস

ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ-এর হিজরতের পর তিনি যখন মদিনায় অবস্থান করছিলেন তখন মদিনার মানুষদের ঐতিহ্য বা কালচার হিসেবে পালিত উৎসবে ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ দেখে একদিন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন তারা এটি কি হিসেবে পালন করে থাকে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে এই দুইটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন, এর একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হলো, ঈদুল আজহা।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ১১৩৪)
কোরবানির কি?
কোরবানির ঈদ মুলত মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। এটি কোরআন ও হাদিসের আলোকে হিজরি সনের জিলহজ মাসের দশম তারিখে পালিত হয়। এই দিন নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কিংবা যাকাত ফরজ এমন ব্যক্তির উপর ইসলামে দৃষ্টিতে হালাল ও কোরবানির জন্য অনুমোদিত পশু (উট, দুম্বা, ছাগল, বকরি, গরু কিংবা ছাগল) আল্লাহ রাস্তায় কোরবানি করে থাকে।
কোরবানির ইতিহাস
ইসলামের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানি করতে চাইলে মহান সৃষ্টিকর্তা উভয়ের কাজে খুশি হন। যার পুরস্কার সরূপ কোরবানির এই ধারাবাহিকতা মহান আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ ও তাঁর উম্মতদের জন্যও নির্দেশ দেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর এই সুন্নত শেষ নবীর উম্মত হিসেবে আমাদের জন্য ওয়াজিব।
শেষকথা
কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে শুধু বাংলাদেশ কিংবা ভারত উপমহাদেশের মানুষ-ই খোঁজ করে না সৌদি আরব কিংবা দুবাই বা আবুদাবির মানুষও খোঁজ করে থাকে কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে। বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটি সাধারণত জিলকদ মাসের ২৮ ও ২৯ তারিখে সভা করে কবে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাবে এবং কোরবানির ঈদ ২০২৪ কত তারিখে হবে তা জানিয়ে দেয়। তবে, চাঁদ দেখা কমিটি নিজেরা চাঁদ দেখার পাশাপাশি অন্য যে কোনো নাগরিক যদি খালি চোখে চাঁদ দেখে তা প্রমানসহ উপস্থাপন করলে এবং গ্রহণযোগ্য হলে তা মেনে নেয়।
