শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে
২০২৪ সালের শবে বরাত কোন মাসের কত তারিখে হবে বা শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে তা আগে থেকেই বলা মুশকিল। কারন মুসলমানদের সকল ধর্মীয় উৎসব হিজরি সনের ক্যালেন্ডার বা চন্দ্র বর্ষপঞ্জি মোতাবেক হয়ে থাকে বলে শবে বরাত, শবে কদর, রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা, শবে মেরাজ ও ঈদে মিলাদুন্নবি কবে হবে বা কোন মাসের কত তারিখে হবে তা মূলত চাঁদের উপর নির্ভরশীল

২০২৪ সালের শবে বরাত কোন মাসের কত তারিখে হবে বা শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে তা আগে থেকেই বলা মুশকিল। কারন মুসলমানদের সকল ধর্মীয় উৎসব হিজরি সনের ক্যালেন্ডার বা চন্দ্র বর্ষপঞ্জি মোতাবেক হয়ে থাকে বলে শবে বরাত, শবে কদর, রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা, শবে মেরাজ ও ঈদে মিলাদুন্নবি কবে হবে বা কোন মাসের কত তারিখে হবে তা মূলত চাঁদের উপর নির্ভরশীল। যদিও চন্দ্র মাসের শুরু ও শেষ নির্ভর করে প্রতি মাসের নতুন চাঁদের উপর তারপরও বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারে এবং জৌতি শাস্ত্র ও স্যাটেলাইটের সহযোগিতায় কবে কোন মাসের কত তারিখে নতুন চাঁদ উদিত হবে এবং একটি চাঁদের পরিসমাপ্তি হবে তা আগে থেকেই জানা সম্ভব।
বর্তমানে, সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো যারা হিজরি সনের ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে থাকে তারা এসকল প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে পূর্বেই শবে বরাত, শবে কদর, রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা, শবে মেরাজ ও ঈদে মিলাদুন্নবিরদিনক্ষণ নির্ধারণ করে থাকে। আসুন জেনে নেয়া যাক ২০২৪ সালের পবিত্র শবে বরাত কোন মাসের কত তারিখে হবে বা কবে।
শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে / ২০২৪ সালের পবিত্র শবে বরাত কোন মাসের কত তারিখে
শবে বরাত হলো মুসলমানদের ধর্মীয় একটি বিশেষ আচার যা মূলত হিজরি সনের অষ্টম চন্দ্র মাস শাবান মাসের ১৫তম দিবসের রজনীতে বা ১৪তম দিবসের দিবাগত রাতে পালিত হয়ে থাকে। আল্লাহভীরু ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আগে থেকেই শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। তারা বিভিন্ন মদ্যমে খুজতে থাকেন পবিত্র শবে বরাত কবে হবে বাংলাদেশ।
সৌদি আরব, দুবাইসহ মদ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হিজরি সনের ক্যালেন্ডার, বাংলাদেশের সরকারি ক্যালেন্ডার ২০২৪ মোতাবেক দেখা যায় যে, ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মাসের ২৫ তারিখ দিবাগত রাতে মুসলমানদের পবিত্র শবে বরাত ২০২৪ পালিত হবে। তবে, পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে তা একদিন আগে কিংবা পরে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শবে বরাত ২০২৪ ছুটি
ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন সুত্র তথা হাদিস অনুযায়ী পবিত্র শবে বরাত মুলত চন্দ্র মাস শাবানের মধ্য রজনীকে বুঝানো হয়েছে। সে হিসেবে শাবানের ১৪তম তারিখের দিবাগত রজনীতে বা ১৫তম রজনীতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে উদযাপন করলেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবীগণ পরবর্তী দিন ছুটি উপভোগ করবেন। সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৪ অনুযায়ী নির্বাহী আদেশে পবিত্র শবে বরাত ২০২৪ ছুটি হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ। উল্লেখ্য, ইসলামী নিয়ম বা চন্দ্র বর্ষের হিসাব অনুযায়ী কোন তারিখ গণনার ক্ষেত্রে রাতের হিসাব আগে করা হয়ে থাকে।
শবে বরাত ২০২৪ সৌদি আরব, দুবাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন
শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত যা ভাগ্য নির্ধারণ রজনী হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার কিছু কিছু দেশে উদযাপিত ও পালন করা হলেও ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় পরিচালিত দেশ সৌদি আরব কিংবা দুবাইতে এই ধরনের কোনো দিবস বা ইসলামী আচার পালিত হওয়ার রেওয়াজ নেই। কারন হিসেবে সে সকল দেশের ইসলামী স্কলারগণ এই বিষয়ে সহীহ হাদিসে নবী মোহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর নির্দেশনা কিংবা পবিত্র কোরআনে কোনো বর্ণনা নেই মর্মে মত পোষণ করেন।
এছাড়া, ইসলামের পবিত্র শহর মক্কা কিংবা মদিনাতেও এমন কোনো রেওয়াজ নেই বলে জানা যায়। সে হিসেবে আমরা বলতে পারি যে শবে বরাত ২০২৪ সৌদি আরব, দুবাই কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাত কোনোভাবেই পালন করবে না। সুতরাং শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে সৌদি আরব, দুবাই কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং বাহরাইন-এ পালিত হবে তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
তবে, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং আফ্রিকার কিছু কিছু দেশ দিবসটি বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে এবং প্রচলিত কিছু রেওয়াজ মেনে থাকে। অনেক দেশ রয়েছে যেখানে এই দিনে যুবক-যুবতিদের বিয়ের আয়োজন করে থাকে।
শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে ভারত
ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ইসলামি শরিয়তের আচার-আচরণ ও দিবসসমূহ সাধারণত একই দিনে পালন করে থাকে। মুনপেইজ ও মুন গেইন ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের মতো ভারত ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত ২০২৪ পালন করবে এবং শবে বরাত ২০২৪ ছুটি ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখে উপভোগ করবে।
শবে বরাতের হাদিস
শবে বরাত নিয়ে মুহাদ্দিসগণ দুইধরনের মতামত দেওয়ায় পালন নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে দুটো পক্ষ তৈরি হয়েছে। শবেবরাত নিয়ে স্পষ্ট বর্ণনার কোনো হাদিস নেই কিংবা জয়িফ হাদিস রয়েছে একদল মুহাদ্দিস মনে করলেও অন্য দল মনে করেন যে, এই ধরনের কোনো দিবস নবী করিম হযরত মুহাম্মদ (স) জীবদ্দশায় তিনি কিংবা কোনো সাহাবী বা তাবেইনগণ পালন করেন নি বিধায় তারা এই দিবসের বাইরে অবস্থান করছে।
শবে বরাতের ফজিলত

শবে বরাত পালন নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে দুটো পক্ষের অবস্থান থাকলেও গুটিকয়েক হাদিসে এর ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়। এই রজনীতে ইবাদত-বন্দেগীও রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব। শবে বরাত পালনীয় মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারা পোষণ করেন যারা তারা হাদিসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা রয়েছে বলে মনে করেন। এই রজনীতে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার নৈকট্য লাভের জন্য ইবাদত করার নির্দেশনা রয়েছে। এই রজনতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পরবর্তী একবছরের জন্য হায়াত, রিজিক ও ভাগ্য বন্টন করে থাকেন। গুনাহ হতে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
শবে বরাতের আমল
গুরুত্ব ও ফজিলত বিবেচনা করে শবে বরাতের রয়েছে অনেক আমল। এসব আমলের মধ্যে অন্যতম হলো শবে বরাতের রোজা, শবে বরাতের নামাজ, শবে বরাতের দোয়া ও জিকির, কোরআন তেলায়ত ইত্যাদি। এদিন রোজা করা এবং রাতে নফল নামাজের আমল ও কোরআন তেলায়ত হলো সবচেয়ে উত্তম আমল। সালাতুত তসবিহ, সালাতুল হাজত, তাহাজ্জুদ নামাজসহ নফল নিয়তে নামাজ আদায় করা যাবে।
এছাড়া, কয়েকটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, এই রজনীতে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাঁর ফেরেস্তাসহ প্রথম আসমানে এসে ইবাদতে মশগুল বান্দাদের ক্ষমা করার উদ্দেশ্যে ডাকতে থাকেন।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো নির্দেশনা কোরআন মজিদ ও সহীহ হাদিস গ্রন্থসমূহে উল্লেখ নেই। তবে, যে কেউ নফল নিয়তে দুই রাকাত দুই রাকাত করে যেকোনো পরিমাণ কিংবা যতটুকু সম্ভব পড়তে পারে। এই নামাজ পড়তে নির্দিষ্ট কোনো সুরা কিংবা আয়াত নির্দিষ্ট করা নেই। যেকেউ অন্যান্য নামাজের ন্যায় যেকোনো সুরা কিংবা আয়াত দিয়ে শবে বরাতের নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে, কেউ সালাতুত তসবিহ পড়তে চাইলে হাদিসে বর্নিত নির্দিষ্ট দোয়া সহকারে নিয়ম মেনে পড়তে হবে। এছাড়া, তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব বিবেচনায় এই রজনীর শেষাংশে জামাত কিংবা একাকী আদায় করা উত্তম।
শবে বরাতের রোজা
শবে বরাতের আমল ও ফজিলত এবং গুরুত্ব বিবেচনায় এই রজনীতে করা আমলের পাশাপাশি দিবসে রোজা পালনের নিয়ম রয়েছে। সচরাচর নফল রোজা করার নিয়মেই এই দিবসের রোজা পালন করা হয়ে থাকে।
শবে বরাতের রোজা কয়টি
শবে বরাতের নামাজ, দোয়া ও জিকির এবং অন্যান্য আমলের পাশাপাশি রোজা পালনের প্রচলন রয়েছে। কিন্তু মতভেদ বা মতপার্থক্য রয়েছে শবে বরাতের রোজা কয়টি হবে তা নিয়ে। যেহেতু এই দিবস উদযাপনের হাদিসের বর্ণনা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে সেহেতু প্রাসঙ্গিক আমলেও তাই দেখা যায়। অনেকেই রয়েছেন যারা একটি রোজাই পালন করে থাকেন। তবে যেহেতু শবে মেরাজের রোজা একের অধিক রাখার নির্দেশ প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স) প্রদান করেছেন মর্মে সহীহ হাদিস রয়েছে তাই অনেকেই শবে বরাতের রোজাও দুটি পালন করে থাকেন। অপরদিকে, আইয়ামে বীজের রোজা হিসেবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা পালন করারও নির্দেশনা রয়েছে, তাই রবিউল আউয়াল মাসের আইয়ামে বীজের রোজাসহ শবে বরাত ২০২৪ এর রোজার সংখ্যা চারটি হবে।
শবে বরাতের নিয়ত বা শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
অনেকেই শবে বরাতের নিয়ত কি জানতে চা কিংবা ইন্টারনেটে খুজতে থাকেন। বিষয়টি শবে বরাতের নামাজের নিয়ত হতে পারে। শবে বরাতের নামাজের নিয়ত অন্যান্য নফল নামাজের নিয়তের মতই হবে। এক্ষেত্রে আলাদা কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না।
শেষকথা
শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে কিংবা কবে বা কোন মাসের কত তারিখে হবে বিষয়টি আলোচনার প্রেক্ষিতে পারিপার্শ্বিক বহু বিষয়াবলীর আলোচনা ও বর্ণনা করা হয়েছে। বিষয়গুলো সম্পর্কিত বিধায় আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া, ইসলামের সকল ধরনের আচার-অনুষ্ঠান চাঁদের সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে তা নিশ্চিত বলা দুষ্কর। আমরা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এ ব্যবহৃত হিজরি সনের ক্যালেন্ডার ও বাংলাদেশের সরকারি ক্যালেন্ডার ও সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৪ এর উপর ভিত্তি করে শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে হবে সেই সম্ভব্য তারিখটি মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
তবে, শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে তা হিজরি সনের রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে গণনা করা যাবে।
