সিমেন্টের টবের দাম
সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার উপকরণ সিমেন্টের টবের দাম ও পানির ফোয়ারা দাম

মাটি কিংবা প্লাস্টিকের টবের মতই সিমেন্টের টব তৈরি এখন শিল্পে পরিণত হয়েছে শুধু সিমেন্টের টব বানানোর পদ্ধতি সহজ ও সাবলীল বলে। সিমেন্টের টবের দাম বেশি না সাশ্রয়ী তা নিয়ে সংশয় থাকলেও বাসা কিংবা অফিসের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এটি যে বর্তমান সময়ের ট্রেন্ড-এ পরিণত হয়েছে তা বলা বাহুল্য। বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের অফিস, বাংলো বাড়ি, হোটেল কিংবা রিসোর্টস ছাড়াও ল্যান্ডস্কেপ সাজাতে সিমেন্টের টবের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। সিমেন্টের তৈরি টব (ইনডোর এবং আউটডোর) মাটি কিংবা প্লাস্টিকের টবের চেয়ে টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ীও বটে। সিমেন্টের টবের দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্থানের আভিজাত্য ও রুচিশীলতা ফুটিয়ে তুলতে চমৎকার কাজ করে। এছাড়া সিমেন্টের তৈরি টবে লাগানো গাছ আতিরিক্ত বৃষ্টি, রোদ, বাতাস কিংবা ঝড় সকল প্রতিকূলতায় মানিয়ে নিতে সক্ষম।
সিমেন্টের টবের দাম মূলত এতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও আভিজাত্যের ফুটিয়ে তুলতে করা চমৎকার কারুকাজের জন্যই। সিমেন্টের তৈরি হওয়ায় যেকোনো আবহাওয়া বা ঋতুতেই এটিকে নিশ্চিন্তে ঘরে কিংবা বাহিরে স্থাপন করা যায়। এটি প্লাস্টিক কিংবা অন্য কোনো যেকোনো উপকরণের চেয়ে বেশি পরিবেশ বান্ধবও বটে। এটি গাছের শেকড়কে আতিরিক্ত রোদ ও গরম থেকে রক্ষা করে।
একটি গাছ বেশিদিন একই টবে থাকার ফলে বড় কিংবা শেকড় বৃদ্ধির ফলে মাটি বা প্লাস্টিকের টবে বারবার পরিবর্তন করতে হয় যা সিমেন্টের টব ব্যবহারের ফলে করতে হয় না বিধায় আর্থিক সাশ্রয়ও হয়। এছাড়া, বড় কোনো স্থাপনার লবি বা পোর্চে অন্য যেকোনো উপকরণের তৈরি টবের চেয়ে চমৎকার সিমেন্টের তৈরি টব।
সিমেন্টের টবের দাম
সিমেন্টের টবের দাম বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এই ধরনের টব সাধারণত দুইশো টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। সিমেন্টের টবের দাম নির্ভর করে এর কাঠামোগত নকশা ও কারুকাজ, সিমেন্টের টব তৈরি করার উপকরণ, উপস্থাপনে ব্যবহৃত রঙ এবং আকার ও আকৃতির উপর। গর্জিয়াস ও চমকপ্রদ নকশার একটি বড় সাইজের সিমেন্টের টবের দাম সাধারণ কিংবা ছোট একটি টবের থেকে অনেক বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক। সিমেন্টের টবের দাম নকশা ও কারুশৈলী ছাড়াও এর সাইজের উপরও নির্ভর করে। সাধারণত একই নকশা ও কারুকাজের একেক উচ্চতার টবের দাম একেক রকম হয়। উচ্চতার পাশাপাশি টবের দাম নির্ভর করে এটির ব্যাস বা ডায়ামিটার-এর উপর।
সিমেন্টের তৈরি টব সাধারণত ক্লাসিক, স্কয়ার, গোলাকৃতির, পঞ্চভুজ বা ষড়ভুজ, ওয়েভ বা ঢেউ খেলানো, বাকেট বা বলতি আকৃতির এবং সিলিন্ডার আকৃতির ও ছাড়ানো বা বেল আকৃতির হয়ে থাকে। এসব আকৃতিগত ডিজাইন ছাড়াও রয়েছে কারুকার্যের পার্থক্য। এর পাশাপাশি সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পার্থক্য আনা হয় রঙের কাজেও। সচরাচর এই বিষয়গুলোর উপরই নির্ভর করে সিমেন্টের টবের দাম।
ক্লাসিক টব (Classic Planter)
ক্লাসিক টব মূলত এন্টিক শ্রেণীর টব যা এক সময় সেকেলে বলে গণ্য হলে বর্তমানে এই ধরনের টবের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের টবগুলো চৌকোণা হয়ে থাকে। টবে বর্গাকার, আয়তকার ও গোলাকার তিন রকম দেখতে পাওয়া যায়। এই ধরনের টবের দাম তুলনামূলক সস্তা। তবে, আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সেকেল বা পুরানো এই টবে। এই ধরনের টবের উচ্চতা ১২-১৬ ইঞ্চির বেশি হয় না।এসব টবের দাম ১৫০০ হতে ৩০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
ক্লাসিক টবের সাথে পশ্চিমা নকশা যুক্ত হয়ে এক ধরনের নতুন শ্রেণী তৈরি করা হয়েছে যাকে নাম দেয়া হয়েছে ভিক্টোরিয়া। মূলত স্কয়ার আকৃতির এন্টিক এই টবের ধারগুলো এবং চার কোনায় রাজকীয় নকশা ফুটিয়ে তোলা হয় যা মুল টবের উচ্চতা হতে ২-৩ ইঞ্চি উচু হয়ে থাকে। এই টবগুলোর দাম ২৫০০ হতে ৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
ক্লাসিক টবের মধ্যে রয়েছে কলশি আকৃতির, জগ আকৃতির, বালতি আকৃতির, প্লেট আকৃতির ও ওভাল বা গোলাকৃতির। আকৃতিগুলো মূলত গাছের ধরন ও শ্রেণীর উপর করে তৈরি করা হয়ে থাকে। এছাড়াও, একটি টব কথায় রাখা হবে তার উপরও নির্ভর করে কেমন আকৃতির হবে টবটি।
ঢেউ আকৃতির টব (Wave Planter)
এই ধরনের সিমেন্টের টবগুলো মূলতঃ ক্লাসিক শ্রেণীর টবের মতই যেখানে শুধু টবের উপরিভাগের ডিজাইনটি দেখতে ঢেউ আকৃতির হয়ে থাকে। ক্লাসিক টবগুলোর মতই এই ধরনের টবগুলোও আয়তকার এবং গোলাকার হয়ে থাকে। ক্লাসিক টবের মত ঢেউ আকৃতির টবও কলশি , জগ , বালতি , প্লেট ও ওভাল বা গোলাকৃতির। এই টবগুলোর দাম ২৫০০ হতে ৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
বর্গাকার টব (Square Planter)
বর্গাকার টবগুলো সাধারণত বর্গাকৃতির অর্থাৎ দৈর্ঘ ও প্রস্থ সমান হয়ে থাকে। ক্লাসিক কিংবা ওয়েভ প্লান্টারের মত বর্গাকৃতির টবগুলো বিভিন্ন শেপ বা আকৃতির হয় না। বর্গাকৃতির সিমেন্টের টবের দাম অন্যান্য টবের চেয়ে কিছুটা সস্তা। ছোট, বড় ও মাঝারি আকৃতির এসব টব ৫০০-৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
নকশায় বৈচিত্র্য বা ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে সিমেন্টের টবের দাম
উপরে আলোচিত আকৃতিগত দিক থেকে টবের দামের পাশাপাশি নকশা শৈলী বা ডিজাইনের উপর ভিত্তি করেও সিমেন্টের টবের দাম কম বেশি হয়ে থাকে। সিমেন্টের টবের বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ঢাকা ও এর আশেপাশে জেম্ন-আশুলিয়া, সাভার ও পূর্বাচল এলাকায় কিছু ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই ধরনের টব তইর করে থাকে। কিছু কমন ডিজাইন রয়েছে যা সকলের নিকট পাওয়া যায় এবং দামও প্রায় কাছাকাছি।
তবে, ইউনিক বা একক নকশার টবের চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি। প্রতিটি নকশার বা ডিজাইনের টব ৩-৫ সাইজের হয়ে থাকে। যেমন- ছোট, মাঝারি ও বড়। এই তিনটি সাইজের বেশি চাহিদা। এই তিন সাইজ ছাড়াও আরো দুটি সাইজ পাওয়া যায় যা আনুপাতিক হারে ছোট।

ওয়াটার ফাউন্টেন – কৃত্রিম ঝর্ণা বা পানির ফোয়ারা
বাসা কিংবা অফিসে রাজকীয় ও দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে সিমেন্টের টবের পাশাপাশি দেখা যায় কৃত্রিম ঝর্ণা যা মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী ও সিমেন্টের। ওয়াটার ফাউন্টেন বা কৃত্রিম এই ঝর্ণা যেকোনো স্থানের নান্দনিকতাকে বাড়িয়ে দেয় হাজার গুণ। বিভিন্ন ধরনের পানির ফোয়ারা তৈরি করা হয়ে থাকে যেমন: পাহাড়ি ঝর্ণা, পাঞ্চিং ফাউন্টেন, মিউজিক্যাল ফাউন্টেন, ওয়াল ফাউন্টেন ইত্যাদি।
পানির ফোয়ারা দাম
কৃত্রিম ঝর্ণা না পানির ফোয়ারা বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে বিধায় এর দাম মূলত এর আকার ও নকাশার উপর নির্ভর করে। এছাড়া, পানির ফোয়ারায় ব্যবহৃত উপকরণ ও উপাদানের উপর নির্ভর করে দামের তারতম্য। যেমন কিছু ঝর্ণা রয়েছে যা বিভিন্ন ধরনের নুড়ি পাথার বা পাথরের ভগ্নাংশ দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আবর কিছু মাটির তৈরি উপাদানসহ বিভিন্ন কৃত্রিম জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এসব টব শুধু সিমেন্ট দিয়ে তৈরি টবের তুলনায় অনেক দামী হয়ে থাকে। এগুলোর চেয়ে মেটাল দিয়ে তৈরি টবের দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামের পানির ফোয়ারা বিক্রি হয়ে থাকে। অপরদিকে, কোন স্থানে ফিক্সড বা স্থায়ী ফোয়ারা তৈরি করতে ২০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
কেন ব্যবহার করবেন সিমেন্টের টব
সময়ের চাহিদা ও লাইফস্টাইল ট্রেন্ড হিসেবে বর্তমানে সিমেন্টের তৈরি ফুলের টবের ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে। সিমেন্টের তৈরি টব ব্যবহারে যেমন আভিজাত্য ও রুচিশিলতার প্রকাশ পায় ঠিক তেমনই এর রয়েছে বহুবিধ সুবিধা। বেশ কিছু সুবিধার মধ্যে রয়েছে সাশ্রয়ী, টেকসই,
আভিজাত্য ও রুচিশিলতার প্রতীক
সিমেন্টের তৈরি টবকে একসময় পুরানো কিংবা সেকেলে বললেও আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তি, শৈলী ও সরঞ্জামের সাহায্যে যেকোনো ধরনের ডিজাইনে ফুটিয়ে তোলা ও তৈরি করা সম্ভব। কারুশিল্পীর দারুণ শৈলী ও নিত্য নতুন নকশার সাথে নির্মাণ সামগ্রী ও বিভিন্ন ধরনের রঙ ও ডাইস ব্যবহারের কারণে একেকটি টব হয়ে উঠে অনন্য হয়ে।
টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী
সিমেন্টের তৈরি টবের সবথেকে বড় সুবিধাগুলোর মধ্যে প্রধান সুবিধা হলো এটি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী। অন্যান্য উপকরণ যেমন মাটি কিংবা প্লাস্টিক বা মেটালের তৈরি টব একটি নির্দিষ্ট সময় পরবর্তী এর কর্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং নষ্ট হয়ে যায়, যা অপচয় এবং খরচ বৃদ্ধি করে। অপরদিকে, সিমেন্টের টব তৈরি এবং এতে ব্যবহৃত উপকরণ ও উপাদানের জন্য তা টেকসেই ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
পরিবেশ বান্ধব
সিমেন্টের তৈরি টব প্লাস্টিক কিংবা ধাতব উপাদানের চেয়ে বেশি পরিবেশ বান্ধব।
যেকোনো আকারের হয়
সিমেন্টের তৈরি টবগুলো নির্দিষ্ট চাঁচের মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে বলে গ্রাহকের অনুরোধ করা যেকোনো আকারের বা সাইজের করে তৈরি করে দেওয়া সম্ভব যা বাজারে থাকা তবে পাওয়া সম্ভব নয়।
সিমেন্টের টব কথায় কিনতে পাওয়া যায়
ফ্রেশি বাংলাদেশ নান্দনিক ও আধুনিক নির্মাণশৈলী ব্যবহার করা একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা সিমেন্টের টব তৈরি করে থাকে। এদের রয়েছে একদল প্রশিক্ষিত কর্মী ও কিয়েটিভ প্রকৌশলী যাদের রয়েছে ২০ বছর ধরে একই সেক্টরে কাজের অভিজ্ঞতা। সিমেন্টের টব তৈরি ও বিপণনের পাশাপাশি ফ্রেশি বাংলাদেশ কাজ করে সিরামিকের টব, বাঁশের টব, মাটির টব, পিতল বা কাঁসার টব ও পাট বা পাতার তৈরি টব নিয়ে।
